জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি: আগামী ৫ অক্টোবর থেকে আবাসিক হল খোলার কথা থাকলেও আজ, ১ অক্টোবর (শুক্রবার) দুপুরেই তালা ভেঙে হলে ঢুকে পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী৷ ঢাবির অমর একুশে হলে এ ঘটনা ঘটেছে৷
আজ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন অমর একুশে হলের প্রাধ্যক্ষ ইসতিয়াক এম সৈয়দ।
তবে হল কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা এখনও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তেই অটল আছেন।
দীর্ঘদিন হলের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা এতদিন মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে ক্যাম্পাসের আশপাশে বিভিন্ন জায়গায় থাকতেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগামী ৫ অক্টোবর থেকে হল খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও অতিরিক্ত মেস ভাড়ার টাকা বাঁচাতেই হলে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, সেপ্টেম্বর মাসে তারা মেস ছেড়ে দিয়েছেন। মাত্র পাঁচদিনের জন্য পুরো মাসের ভাড়া দিতে হবে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই হলে উঠতে হয়েছে তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা অসহায় হয়ে হলে উঠতে বাধ্য হয়েছি। মাত্র পাঁচদিনের জন্য পুরো মাসের ভাড়ার টাকা দিতে হবে তাই আমার মতো অনেকেই মেস ছেড়ে দিয়েছে। এখন হয় ৪/৫ দিনের জন্য বাড়ি ফিরে যেতে হবে নয়তো রাস্তায় থাকতে হবে। আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়ে আমরা হলে উঠেছি।
প্রাধ্যক্ষ ইসতিয়াক এম সৈয়দ বলেন, ক ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় আমিসহ হল প্রশাসনের একটি অংশ তা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। সাড়ে ১২টার দিকে ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী হলে আসেন। হলের মূল ফটকের পকেট গেটটি তখন খোলা ছিল। শিক্ষার্থীরা ওই ফটক দিয়ে ঢোকেন। নিরাপত্তার স্বার্থে হলের ভেতরের ভবনগুলো তালাবদ্ধ ছিল। শিক্ষার্থীরা ওই তালাগুলো ভেঙে হলের ভেতর ঢুকে পড়েছেন।
পদার্থবিজ্ঞানের এই শিক্ষক জানান, প্রশাসনের অংশ হওয়ায় তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মো. নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, অমর একুশে হলের প্রাধ্যক্ষ ইসতিয়াক এম সৈয়দ তাঁকে অনুরোধ করলে শিক্ষর্থীদের সঙ্গে কথা বলতে হলটিতে যান। ৫ অক্টোবরের আগে হলে না ওঠার অনুরোধ জানালেও শিক্ষার্থীরা হল থেকে চলে যেতে অস্বীকৃতি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, অমর একুশে হলে শিক্ষার্থীদের উঠে পড়ার বিষয়টি তাঁরাও জানতে পেরেছেন৷ হল কর্তৃপক্ষকে আলোচনার ভিত্তিতে বিষয়টির দ্রুত সমাধান করতে বলা হয়েছে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় হওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার প্রমাণপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের আগামী ৫ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে আবাসিক হলে তোলা হবে। দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর গত বছরের ২০ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে হলগুলো বন্ধই আছে।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থীদের নানান ধরনের প্রতিকূলতা বিবেচনায় নিয়ে ১ অক্টোবর থেকে হল খোলার অনুরোধ জানিয়ে আসলেও তাদের অনুরোধ অগ্রাহ্য করে ৫ অক্টোবর থেকেই হল খোলার সিদ্ধান্ত বহাল রাখে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।